শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে কি লাভ? | What is the benefit of investing in the stock market? | শেয়ার সূচক আসলে কি? | What are Indices?

 


শেয়ার সূচক আসলে কি? What are Indices?

যখনই আমরা সংবাদপত্রে বা টিভিতে Business চ্যানেল চালু করি, তখনই আমরা শুনতে পাই যে সেনসেক্স অনেক পয়েন্ট উপরে বা নিচে গেছে। একইভাবে, নিফটি, ব্যাঙ্কনিফটি ইত্যাদিও অনেক পয়েন্ট কমেছে বা বেড়েছে। সেনসেক্স, নিফটি, ব্যাঙ্কনিফটি আসলে কি? এগুল সব স্টক সূচক আরও অনেক সূচক আছে। এগুলো নেমে গেলে বা বেড়ে গেলে তার একটা পরিমাপ পাওয়া যায়। এগুলো প্রত্যেকটি হল শেয়ার বাজারের বাড়া কমার মাপকাঠি। আমরা জেনেছি যে বর্তমানে ভারতে মূলত দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে যা ইন্টারনেট এবং স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সারা ভারতে একযোগে স্টক লেনদেন করে। তারা হল NSE এবং BSE(মুম্বাই)বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (BSE) নথিভুক্ত মোট কোম্পানিগুলির মোট সংখ্যা থেকে নির্বাচিত 30টি বড় কোম্পানি নিয়ে গঠিত হয়েছে ‘সেনসেক্স’, বিভিন্ন শিল্প বা শিল্প যেমন ব্যাঙ্কিং, ইঞ্জিনিয়ারিং, অটোমোবাইল, সিমেন্ট, ফার্মাসিউটিক্যাল, আইটি, ভোক্তা টেকসই, টায়ার ইত্যাদি থেকে কোম্পানিগুলি নির্বাচিত হয়  । "CNX নিফটি" বা সাধারণভাবে "নিফটি 50" ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে (NSE) তালিকাভুক্ত মোট কোম্পানির মধ্যে বিভিন্ন সেক্টর বা শিল্প থেকে নির্বাচিত 50টি বৃহত্তম কোম্পানি নিয়ে গঠিত। "NIFTY 50" সূচকটি প্রায় 20টি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের প্রতিনিধিত্ব করে। দেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বিভিন্ন শিল্পের বর্তমান আর্থিক অবস্থার প্রতিফলন ঘটাতে এই সূচকগুলো খুবই সফল। একইভাবে, ব্যাঙ্ক নিফটি NSE-তে তালিকাভুক্ত 12টি প্রধান ব্যাঙ্কের শেয়ার নিয়ে গঠিত। বর্তমানে, NSE স্টক সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়। প্রতিদিন বা প্রতি ঘন্টায় বাজার জানতে, নিফটি 50, ব্যাঙ্ক নিফটি এবং সেনসেক্স 30 অনুসরণ করাই যথেষ্ট।

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে কি লাভ?

বেশীরভাগ লোকই শেয়ার বাজারে প্রবেশ করে কারণ তারা অল্প পরিশ্রমে দ্রুত প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে চায়। বাজারের মূল সূত্রটি সবাই সহজেই বুঝতে পারবেন। কী সেটা? না, নিচের দামে শেয়ার কেনো আর উঁচুদামে বিক্রি করো, ব্যাস্। কিন্তু এই সূত্রের ব্যবহারিক প্রয়োগ খুবই কঠিন একটি বিষয়। আমরা পোষ্ট অফিসে বা ব্যাঙ্কে টাকা ডাবল করার জন্য ফিক্সড করে দিয়ে সেই ফিক্সড ডিপোজিটের সার্টিফিকেট নিয়ে কোনোও টেনশন করি না। কিন্তু পুঁজিবাজারের জন্য আমাদের ধৈর্য খুব কম। আমাদের কেনার পর থেকেই যদি আমাদের কেনা শেয়ারটির দাম চড়চড় করে বাড়ে তো বেশ ভালো লাগে, খুব তৃপ্তি পাই। কিন্তু দর পতন চলতে থাকলে আমাদের উৎকণ্ঠার শেষ নেই। আমরা ভুলে যাই যে বিনিয়োগ একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। তাকে উপযুক্ত সময় দিতে হবে। ভালো কোম্পানির শেয়ারের দামেও উত্থান পতন হয় বলেই না আমরা বেচাকেনার সুযোগ পাই। এটা বারবার প্রমাণিত হয়েছে যে ভালো কোম্পানির শেয়ার কেনা আপনাকে দীর্ঘমেয়াদে বহুগুণ লভ্যাংশ প্রদান করবে, বাজার উপরে উঠুক বা নিচে যাক। শুধু তাই নয়, এই স্টকগুলির জন্য বছরে এক বা একাধিকবার ডিভিডেণ্ড পাওয়া যায় এবং রাইট ইস্যু বা বোনাস বা স্পীট হলে আপনার কেনা শেয়ারের সংখ্যা বাড়িয়ে দেবে এবং, আপনি দেখতে পাবেন, আপনি যদি সঠিক স্টক বাছাই করতে পারেন, তাহলে শেয়ার বাজারের উত্থান-পতনের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আপনি যে স্টক কিনবেন তার দাম অনেক দিন পরে অনেক বেড়ে যাবে। এবং, আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না যে আপনি লভ্যাংশ, বোনাস, বিভাজন, রাইট ইস্যু, ইত্যাদির মাধ্যমে যে স্টকগুলি কিনেছেন তা দীর্ঘ সময় পরে আপনাকে এতটা ফেরত দেবে। একইভাবে, বাজারের উত্থান-পতনের সুবিধা গ্রহণ করে, আপনি বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনার মূল বিনিয়োগ অক্ষুণ্ণ রেখে আপনার বিনিয়োগ থেকে অতিরিক্ত আয় করতে পারেন। সর্বোপরি, আপনার Fixed Deposit-এর মেয়াদ উত্তীর্ণের আগে আপনি সেটা ভাঙালে অনেক কম টাকা পাবেন। কিন্তু আপনার কেনা শেয়ার, বাজারের নিরন্তর উত্থান পতনের মধ্যে যে কোনো একটি উত্থানে আপনি বেচে দিয়ে আপনার টাকা ফেরত নিতে পারেন। যাইহোক, আপনি যে শেয়ার কিনছেন তা বাজারের যেকোনো উত্থান-পতনের সময় বিক্রি করে আপনার টাকা ফেরত পেতে পারেন। একইভাবে, Fixed Deposit Mature করার পর আপনার লভ্যাংশটির উপর কর দিতে হবে। কিন্তু যদি কেনার পাঁচ বছর পর স্টক বিক্রি করা হয়, তাহলে তা সম্পূর্ণ করমুক্ত। তাই আমরা যদি শেয়ার বাজার ভালোভাবে অধ্যয়ন করে বিনিয়োগ করি, তাহলে শেয়ারবাজার বিনিয়োগের জন্য একটি আদর্শ জায়গা।

Comments